▪️১৯৩৯ সালে ‘মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন, ১৯৩৯’ প্রণীত হয়। অত্র আইনের ৫ ধারাতে উল্লেখ আছে, ‘স্ত্রী কর্তৃক বিবাহ বিচ্ছেদের (তালাক) ফলে স্ত্রীর দেনমোহরের অধিকার খর্ব হবে না।’ অর্থাৎ কোনো মহিলা যদি কোনো কারণে তার স্বামীকে তালাক দেন, তাহলে উক্ত স্বামী দেনমোহরের নির্ধারিত টাকা স্ত্রীকে পরিশোধ করতে বাধ্য। আদালত তাকে (স্বামীকে) কোনো অজুহাত দেখানোর সুযোগ দেবেন না। যেমন স্বামী বলতে পারবেন না, ‘তালাকের নোটিস বস্তুত স্ত্রীর পক্ষ থেকে এসেছে, সুতরাং সে দেনমোহর পরিশোধ করতে বাধ্য না।’
▪️যদি কোনো স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদ চান, তাহলে তাঁর সেই অধিকার রয়েছে। কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামটিতে যদি আপনার স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করা হয়ে থাকে, তাহলে তিনি সরাসরি আপনাকে তালাক দিতে পারেন। আর ১৮ নম্বর কলামে যদি কোনো ক্ষমতা না দেওয়া থাকে, তাহলে আদালতে যেতে হয়। স্ত্রীর তালাকের ক্ষমতা না থাকলে পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে তালাকের ডিক্রি নিতে হয়।
▪️মনে রাখতে হবে, স্বামী বা স্ত্রী যিনিই তালাক দিন না কেন, দেনমোহরের টাকা অবশ্যই স্ত্রীকে দিতে হবে। তবে বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য জীবনযাপন না হলে কিংবা স্বামীর মৃত্যু হলে দেনমোহরের অর্ধেক পরিশোধ করা যাবে। তালাক বা স্বামীর মৃত্যুর কারণে বা অন্য কোনো কারণে স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্ক ছিন্ন হলেও স্ত্রী তার স্বামীর অনুপস্থিতিতে তার উত্তরাধিকারীদের কাছে এই দাবি করতে পারবে।
▪️আবার স্বামীর আগে স্ত্রী মারা গেলেও দেনমোহর মাফ হয় না। স্ত্রীর উত্তরাধিকারীরা এই দেনমোহরের হকদার। তারাও মামলা করার অধিকার রাখে। যদি স্ত্রীর মোহরানা পরিশোধ করা না হয়ে থাকে, তবে অন্যান্য ঋণের মতোই প্রথমে স্বামীর মোট রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে মোহরানা পরিশোধ করতে হবে। বাকি সম্পত্তি ওয়ারিশদের মধ্যে বণ্টন করা হবে যেখানে মোহরানা দেয়ার পরেও স্ত্রী আবার উত্তরাধিকারী স্বত্বে তার অংশ পাবে। মোহরানা পরিশোধ করায় যদি মৃত স্বামীর সম্পত্তি আর অবশিষ্ট না থাকে, তবে অন্যান্য ঋণের মতো সম্পূর্ণ সম্পত্তি মোহরানা বাবদ স্ত্রীকে সমর্পণ করতে হবে। ফলে ওয়ারিশরা আর কোনো অংশ পাবে না।